বিজ্ঞপ্তি:
দৈনিক শাহনামার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। জাতীয়, রাজনীতি, খেলাধুলা, বিনোদন সহ সকল সংবাদের সর্বশেষ আপডেট জানতে ভিজিট করুন www.shahnamabd.com

কঠোর আন্দোলনে সরকার পতনের হুঁশিয়ারি বিএনপির

কঠোর আন্দোলনে সরকার পতনের হুঁশিয়ারি বিএনপির

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি না দিলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির নেতারা।

হবিগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি রূপ নেয় সংঘর্ষে। বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, রাবার বুলেট ছোঁড়ার ঘটনায় শতাধিক আহত হয়। এর মধ্যে ২০ জন গুলিবিদ্ধ রয়েছে।

বুধবার শায়েস্তানগর এলাকায় দলীয় কার্যলয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। দুপুর দুইটার আগে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাওয়ার পথে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।

গুরুতর আহত অবস্থায় জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আহাদ তুষার, ছাত্রদল নেতা সাইদুর রহমানকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, ‌‌‌বিএনপির জেলা সমাবেশ পণ্ড করতে সকাল থেকে নেতাকর্মীদের শহরে‌‌ আসতে পথে পথে বাধা দিয়ে ধরপাকড় করা হয়। মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। এতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

আর পুলিশ জানায়, বিএনপির নেতাকর্মীরা হঠাৎ করে পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার শিমুল জানান, আমাদের ফোর্সসহ অফিসাররা শান্তভাবে ছিলো। কিন্ত তাদের যখন লিডার আসছে ঢাকা থেকে, তারা বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

বিনা উসকানিতে পুলিশ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের বহু নেতাকর্মীকে আহত করে ছত্রভঙ্গ করেছে। যেভাবে তারা টিয়ারগ্যাস ও গুলি ছুঁড়ে আমাদের সমাবেশ বানচাল করেছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এদিকে, টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপির সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কেমন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। নির্বাচন কমিশন দিয়ে কী হবে। সরকারই তো এই দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে দিয়েছে। এই আওয়ামী লীগ সরকার যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকবে ততক্ষণ নির্বাচন কমিশন করে কোনও লাভ হবে না। সংলাপ করে কোনও লাভ নেই, পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।

তিনি আরও জানান, স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই নির্বাচন নির্বাচন করে কোনও লাভ হবে না। সংলাপ সংলাপ করে কোনও লাভ হবে না। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে নির্বাচনকালীন যদি কোনও নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে নির্বাচন কোনও দিন অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য চিকিৎসকরা বলছেন, আমরা বলছি তবুও এই অমানবিক সরকার ন্যূনতম মানবতা দেখাচ্ছে না।

অন্যদিকে, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে বগুড়ায়। সমাবেশে জেলার ১২ উপজেলা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে। দেশের জনগণের সঙ্গে আপস করুন, বেগম খালেদা জিয়ার কাছে ক্ষমা চান৷

এদিকে, যশোরে টাউন হল ময়দানে আয়োজিত গণসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের জন্য ছাগল খুঁজছে। কিন্তু এই সরকারের অধীনে কোনও নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। তবে ঘরেও বসে থাকবে না। একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, এ দেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা মুক্তি পেয়ে বিদেশে চলে যায়। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনের দোহাই দিয়ে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। এ সরকার চায় খালেদা জিয়াকে আটকে রাখছে। কারণ তারা মনে করে খালেদা জিয়া দেশের বাইরে গেলে এ সরকার টিকে থাকতে পারবে না। তবে তাকে আটকে রেখেও শেষ রক্ষা হবে না। বিএনপি নেতাকর্মীরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের পতন ঘটাবে।

এছাড়া দিনাজপুরে সমাবেশ থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তা না হলে জনগণের রোষ ও ক্রোধের শিকার হবেন আপনারা।

বুধবার বিকাল ৩টায় শহরের জেল রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে উক্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এসময় জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দলে দলে অংশগ্রহণ করেন। বিকেল ৪টায় সভা শেষ হয়।

সমাবেশের জন্য প্রথমে রেল চত্বরে এবং পরে স্থানীয় লোকভবন প্রাঙ্গণে সমাবেশ করতে চেষ্টা করলে পুলিশের বাধায় তারা নিজ দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। বিক্ষোভ-সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু।

Please Share This Post in Your Social Media




All rights reserved by Daily Shahnama
কারিগরি সহায়তা: Next Tech